শিক্ষা ও শিক্ষক নিয়ে কথা বললে ছোট মুখে একটু বড়োকথা বলা হয়েযাবে হইত। কারণ, ছাত্র হিসেবে আমি মোটেও কোনদিন মেধা ছিলামনা। তবুও প্রথম হতাম স্কুলে। তামাশা করে তাই অনেকে বলতেন, গাধাদের মধ্যে প্রথম বা গিরিয়া জুনিয়র হাই স্কুলে আবার লেখাপড়া হয়নাকী। কথাটা বহুলাংশে সত্য। কারণও ছিল বহু। পদ্মায় তলিয়ে যাওয়া একটা স্কুল এসে জুনিয়র হাই স্কুল হয়েছে। হাতেগোনা যায় তার ছাত্র আর মাষ্টার মশাইদের। এখন তো জুনিয়র থেকে এক্কেবারে উচ্চবিদ্যালয়। ছাত্রছাত্রীতে থৈথৈ করে। পাশে দিয়ে হাঁটলে বিশাল স্কুলটার দিকে তাকিয়ে বিস্ময় লাগে! আমার স্যারেদের মনেপরে। ফিরে যায় সেই স্কুল জীবনে, স্যারেদের আদর, ভালোবাসা সাথে চোখ রাঙানী। বেশী মনেপরে প্রধান শিক্ষক মহাশয় রইশুদ্দীন আহমেদ সাহেবের কথা, একদিন প্রার্থনা শেষে উনি বিশেষ কাজে ছেলেদের বলছেন "কয়েকটা বুদ্ধিমান ছেলে আয় তো"। কোনো ছেলে আর এগোয়না। এদেখে স্যার বিস্মিত হলেন। তখন অন্য স্যার ব্যাপারটা ধরিয়ে দিলেন যে, নিজে থেকে আর কে বুদ্ধিমান সাজতে যাবে। তাই বিরক্ত হয়ে বললেন, "ওরে গাধাগুলো আয়, গাধাগুলো"। এ ব্যাপারটাই আমরা এতো মজা পেয়েছিলাম যে হো হো হাসির একটা রোল ওঠে। এরম শিক্ষকদের কত স্মৃতি আজ মাথায় ভির করছে। তাঁদের কাছ থেকে পাওয়া শিক্ষা, আদর্শ তাছাড়া, এখনও অনেক শিক্ষক গুরুজনদের সান্নিধ্য পেয়ে সমৃদ্ধ হচ্ছি। তাঁদের সকলকে আমি আমার বিনম্র শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। কিন্তু, এখন ঐ স্কুলের পাশ দিয়ে মাথাটা নিচু করে হাঁটতে হয়। কারণ, অনেক চেনা শিক্ষক আছেন। আবার এখন, বেশীরভাগ অচেনা। তাঁরা যখন জিজ্ঞেস করেন কী করছো? তখন এ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারিনা। কারণ, নার্সারি স্কুল বা বেসরকারি স্কুলে পড়িয়ে আর নিজেকে শিক্ষক দাবিকরা যায়না! এমনিতেই নার্সারি শিক্ষকদের ৫০০/- টাকার মাষ্টার আর একটু উঁচু বা দামী বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকদের অপরনাম হাফ মাষ্টার। তো আমি ৫০০/- টাকার মাষ্টার থেকে হাফ মাষ্টার হয়েছি। কিন্তু, হাফ থেকে ফুল মাষ্টার হবার যোগ্যতা যে আমার নেই তা শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতা নির্ণায়ক কয়েকটা পরিক্ষায় প্রমাণ করেদিয়েছে। আর এখন তো নাকী আমরা অযোগ্য। যাক তারজন্য আর অনুশোচনা হয়না। এই কারণে, ক্লাসের ছোট্টছোট্ট ছেলেমেয়েরা যখন বলে এটা আমাদের সবচেয়ে ভালো স্যার তখন, বা চলতি পথে এখান সেখানে শত শত ছাত্রছাত্রীর 'স্যার' কেমন আছেন শুনলেই ভালো লাগে। তাছাড়া, হঠাৎ করে কোন ছেলে সাইকেল থেকে নেমে বলে স্যার চিনতে পারছেন? বলি তুমি কি করছো এখন? প্রতিত্তরে জানাই স্যার আমি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছি তখন, গর্বে বুকটা ফুলে ওঠে।
Monday, September 5, 2016
আমার স্যারদের শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment